বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:১০ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সরকার যখন জামায়াত ঠেকাতে মরিয়া আর জামায়েতকে নিষিদ্ধ করলো ঠিক তখনেই তাদের বাচিয়ে তোলার চেষ্টা করছে জেলা রেজিষ্টার। বরিশাল জেলা রেজিষ্ট্রার সূত্র থেকে জানা যায় যে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ২৮নং ওয়ার্ডে শূণ্য কোঠায় নিকাহ রেজিষ্ট্রার (কাজী) নিয়োগ চুড়ান্ত পর্যায়ে। ২০১৭ সালের তৎকালীন নিকাহ রেজিষ্ট্রার (কাজী) মাওঃ হেলাল উদ্দিন বাল্য বিবাহ পড়ানোর কারনে আদালতে মামলা হয়।
পরবর্তীতে আদালতের আদেশে কারনে উক্ত ২৮নং ওয়ার্ড নিকাহ রেজিষ্ট্রার (কাজী) পদটি শূণ্য করে নতুন ভাবে নিয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে বিগত ৩০/০৫/১৭ ইং তারিখ বরিশাল জেলা রেজিষ্ট্রার নিয়োগ আহবান করেন এবং তৎপরবর্তীতে যাচাই বাছাই পূর্বক প্যানেল প্রস্তুত করত তালিকা আইন মন্ত্রনালয় প্রেরণ করেন। দীর্ঘ সময় আইন মন্ত্রনালয় আইনী জটিলতার কারনে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারেনি।
কিন্তু সম্প্রীতিক সময়ে বরিশাল সদর আসনের এম.পি ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী অবঃ কর্ণেল জাহিদ ফারুক শামীম এর ডিউ লেটারের কারনে প্যানেল ভুক্ত ১ ও ২নং প্রার্থীকে বাদ দিয়ে ৩নং প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট আইন মন্ত্রনালয় বরিশাল জেলা রেজিষ্ট্রারকে চিঠি প্রদান করে। উক্ত আইন মন্ত্রনালয় গুছ প্রক্রিয়ার কারনে হাতে হতে চিঠি পাঠায় কোন রকম মেইল বা ডাক যোগে চিঠি প্রেরণ করেনি।
এ বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করতে গেলে যে চিত্র ফুটে উঠে তা হলো ১) চুড়ান্ত নিয়োগ প্রাপ্ত নিকাহ রেজিষ্ট্রার (কাজী) হাফেজ জাকারিয়া তিনি প্যানেলভূক্ত মেধা তালিকা স্থান ৩য়। ৩০ মার্ক মৌখিক পরীক্ষায় পেয়েছেন ১৭ নম্বর। বাকি ২য় স্থান অধিকারি মাওঃ জিয়াউল ইসলাম তিনি মার্ক পেয়েছেন ১৮ এবং ১ম স্থান অধিকারী ইব্রাহিম খলিল তিনি মার্ক পেয়েছেন ২১। একারনে নিয়োগ পাওয়ার কথা ছিল ১ম স্থান ও ২য় স্থান অধিকারী প্রার্থীগন। কিন্তু ঘটলো তার বিপরীত। ২) হাফেজ জাকারিয়া ২৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন। তিনি মূলত ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
জাতীয় পরিচয় পত্র অনুসন্ধানে তাও বেড়িয়ে আসে। ৩) হাফেজ জাকারিয়া জামায়েত ইসলামী বাংলাদেশ সক্রিয় কর্মী এবং বরিশাল মহানগরীর ৪নং ওয়ার্ড-এর জামায়েত ইসলামীর ইউনিট সভাপতি। ৪) হাফেজ জাকারিয়া বিগত সময়ে ৬নং ওয়ার্ড কাজী মাওঃ মতিউর রহমানের সহকারী ছিলেন। উল্লেখ থাকে যে, মতিউর রহমান বরিশাল মহানগর জামায়েত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারীর দায়িত্বে আছেন। ৫) হাফেজ জাকারিয়ার নামে জামায়েত শিবির তালিকায় কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা রয়েছে। যার মামলা নং-১১, তারিখ ০৬/০৫/১৩ ইং।
ধারা-১৪৩, ১৮৬, ৩৫৩, ৪২৭, ৫০৬ দঃবিঃ। ৬) মতিউর রহমানের নামে মামলা রয়েছে। কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং- ২৭, তারিখ- ১৩/০১/২০০৯ ইং। ধারা- ৩৭৯ দঃবিঃ সহ ৩টি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১৬(২) এবং বিগত ১৩/০৫/১৩ ইং তারিখ গ্রেফতার হয়েছেন। ইহা কোতয়ালী মডেল থানার সূত্র থেকে জানা যায়। তথ্য অনুসন্ধান করতে গিয়ে ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বাদশা এর স্বাক্ষাৎকার গ্রহন করলাম।
তিনি বলেন হাফেজ জাকারিয়াকে আমি চিনি। তিনি জামায়েতে ইসলামী করলেও আমার খুব কাছের লোক আমার নির্বাচন করেছে। যে কারনে তার কোন ক্ষতি হোক এটা আমি চাইনা। এরপর স্বাক্ষাৎকার গ্রহন করলাম ৪নং ওয়াড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হাসান রিন্টু। তিনি বলেন হাফেজ জাকারিয়াকে আমি চিনি তিনি অত্যন্ত ধুরন্দার প্রকৃতির এবং তার চলাফেরা সন্দেহ ভাজন মনে হয়। জামায়াত ইসলামের ৪নং ওয়ার্ডের ইউনিট সভাপতির দায়িত্বে আছেন। যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে তার নেতা কর্মী চলমান সরকারে আমলে নিকাহ রেজিষ্ট্রার (কাজী) হবেন এটা হতে পারে না। আমি শিঘ্রই সিটি মেয়রকে অবহিত করব।
Leave a Reply